সয়াবিন তেল শরীরের জন্য ক্ষতিকর। তাই বিকল্প হিসেবে রাইস ব্রান ও সরিষার তেল খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। বুধবার দ্রব্যমূল্য ও বাজার পরিস্থিতি নিয়ে গঠিত টাস্কফোর্স কমিটির সভা শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, সয়াবিনের চেয়ে রাইস ব্র্যান ভালো। শরীরের জন্যও উপকারী। সয়াবিন নিয়ে আন্তর্জাতিক বাজারের ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে সরকার রাইস ব্র্যান ও সরিষার তেলের উৎপাদন বাড়ানোর চিন্তা করছে বলেও জানান মন্ত্রী। তিনি বলেন, আমাদের বার্ষিক চাহিদার ৯০ শতাংশ ভোজ্য তেল আন্তর্জাতিক বাজার থেকে আমদানি করতে হয়। পাম তেল ও সয়াবিন তেলের ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে দেশীয় জোগানের রাইস ব্র্যান ও সরিষার তেল উৎপাদন বাড়ানো যায় কিনা, বৈঠকে এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। দেশে এখন ৫০ থেকে ৬০ হাজার টন রাইস ব্র্যান অয়েল উৎপাদন হয় এটি খুব সহজেই ৭ লাখ টনে উন্নীত করা সম্ভব। মন্ত্রী সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, রাইস ব্র্যানের সুফল সম্পর্কে প্রচার করতে হবে। ডাক্তার সাহেবদের এ নিয়ে কথা বলতে হবে
বিজ্ঞাপনপাশাপাশি সরিষার উৎপাদন বাড়ানোর সম্ভাবনার কথাও কৃষি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। বুধবারের বৈঠকে ভোজ্য তেল ছাড়াও পিয়াজ, গম ও লবণের মূল্য এবং সরবরাহ পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়। এ প্রসঙ্গে টিপু মুনশি বলেন, খবর রটেছে যে, ভারত গম রপ্তানি বন্ধ করেছে। কিন্তু আমি হাইকমিশনের সঙ্গে আলাপ করে জেনেছি- বাংলাদেশের জন্য রপ্তানি বন্ধ হয়নি। জি-টু-জি ভিত্তিতে আমদানি চালু রয়েছে। পাশাপাশি বেসরকারি পর্যায়ে বাংলাদেশি কোনো ব্যবসায়ী আমদানি করতে চাইলে সেই সুযোগ করে দেয়া হবে। এ ছাড়া দেশে গমের বর্তমান যে মজুত রয়েছে তা দিয়ে সহসা কোনো সংকট হওয়ার কথা নয়। পিয়াজের উৎপাদন খরচ কেজি প্রতি ২০ থেকে ২২ টাকা জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, এর বাইরে বড় পরিমাণের পিয়াজ নষ্ট হয়ে যায়। এখন আমাদের ভাবনার বিষয় হচ্ছে, আমরা কত দামে পিয়াজ খাবো। কৃষকদেরও কিছু প্রণোদনা দিতে হবে তাহলে তারা উৎপাদন বাড়াবে। গতবছর কৃষক পিয়াজের ভালো দাম পেয়ে এবার আড়াই লাখ টন উৎপাদন বাড়িয়েছে। পিয়াজের বাজার পরিস্থিতি নিয়ে সরকার সতর্ক রয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, এখন আমদানি অনুমোদন বন্ধ করা আছে। প্রয়োজন হলে সেটা চালু করে দেয়া হবে। প্রতিবেশী দেশের তুলনায় বাংলাদেশে লবণের দাম বেশি বলে বৈঠকে আলোচনা উঠলে মন্ত্রী বলেন, এ বিষয়ে শিল্প মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বসে বিস্তারিত আলাপ আলোচনা করা হবে। আন্তর্জাতিক বাজারে বেশ কিছু ভোগ্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে অভ্যন্তরীণ বাজারে যে সংকট সৃষ্টি হয়েছে, তা মোকাবিলায় সবাইকে মিলেমিশে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি। বাণিজ্যমন্ত্রী জানান, টিসিবি দেশের এক কোটি পরিবারকে বিশেষ কার্ডের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রয় অব্যাহত রাখবে। আগামী জুন মাসের প্রথমার্ধেই এ পণ্য বিক্রয় শুরু হবে। নির্ধারিত ডিলারের মাধ্যমে দোকান থেকে এসব পণ্য বিক্রয় হবে। প্রয়োজনে নির্ধারিত স্থানে ট্রাক থেকেও বিক্রয় করা হবে। সকল কার্ডহোল্ডার এ পণ্য পাবেন।
বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এসএইএম সফিকুজ্জামান, টিসিবি’র চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আরিফুল হাসান ও বিভিন্ন খাতের ব্যবসায়ী প্রতিনিধি ও মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।