অন্য সময়ের মতো মানুষের হৈ-চৈ নেই। থেমে গেছে অসহ্য যত শোরগোল-কোলাহল। সেভাবে নেই গাড়ির শব্দ, ময়লা আবর্জনা। করোনার আতঙ্ক আর অবিরাম লকডাউনে যখন গোটা বিশ্ব স্থবির, তখন বেড়েছে কেবল প্রকৃতির অন্তরঙ্গতা।
জেগে উঠেছে কৃষ্ণচূড়ার রক্তিমতা। ডালে ডালে নতুন সবুজ পাতার সমারোহ।
সবুজ সেই ডালির মধ্যে লাল কৃষ্ণচূড়ার চোখ ধাঁধানো সৌন্দর্য প্রকৃতিকে করে তুলেছে আরও নান্দনিক। আর প্রকৃতির এই যৌবনাবতী রূপ-রসের সৌন্দর্য প্রকৃতিপ্রেমীদের কাছে স্বর্গীয় সুখের মতো।
তাইতো প্রকৃতিপ্রেমি মাইদুল ইসলাম লিখেছেন,
"আজ বসন্ত কৃষ্ণচূড়ার"
এই বসন্ত না তোমার, না আমার!
আমরা তো সেই কবেই ফুরিয়েছি!
ফুরিয়েছি ষড়ঋতুর দশ মাস ধরে....
আমরা কখনও একসাথে গ্রীষ্মের দীঘিতে
পানকৌড়ির স্নান দেখিনি,
জানালায় হাত বাড়িয়ে যে যার মতো
বৃষ্টি ছুঁয়েছি; কখনও ছুঁয়ে দেখা হয়নি
নিজেদের, খোঁজ রাখা হয় নি কতোটা
বর্ষায় থৈথৈ বুক!
আমরা শরতের শুভ্র মেঘ হয়ে উড়ে
বেড়িয়েছি আকাশের এপাড়া থেকে
ওপাড়ায়, কখনও পাশাপাশি দাড়িয়ে
থাকা, একে অন্যকে ছুঁয়ে থাকা দু'টো
কাশফুল হই নি...
কার্তিকের বিকেলে মন উদাস থেকেছে
একা একা, ফিঙে পাখিটা অনেকক্ষণ বসে
থেকে উড়ে গেছে, বসেছে অন্য কোনো
উঠোনে... কতো উৎসবেও 'নবান্নে'র স্বপ্ন
আঁকা হয় নি...
শীতের জীর্ণতায় মৃতপ্রায় নদীর বুকজুড়ে
যতোটা বেদনা লেখা ছিলো, প্রকৃতির
মাঝে যতোটা রিক্ততা ছিলো; তার
থেকেও সহস্রগুণ আহত হয়েছি, অদৃষ্টের ললাটে
কষ্টিপাথরে শূন্য এঁকেছি তার থেকেও বড়...
তাই, আজ বসন্ত আমাদের নয়।
বসন্ত আজ গাছেদের, পাতাদের,
কোকিলের...
আজ বসন্ত কৃষ্ণচূড়ার!!